আরিফ গাজী :
প্রভাবশালী প্রতিবেশীর সীমানা প্রাচীরে অবরুদ্ধ হয়ে আছে মহিলা মাদ্রাসার শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী ও দুটি পরিবার। দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তায় ইটের প্রাচীর নির্মাণ করায় এখন বন্ধ হওয়ার পথে রাবেয়া বসরী মহিলা মাদ্রাসাটি।
ছাত্র-ছাত্রীসহ দুটি পরিবারের সবাইকে মাদরাসা ও বাড়িতে আসা-যাওয়া করতে হয় মই দিয়ে দেয়াল টপকে। এমনি এক অমানবিক ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের উত্তর বাখরাবাদ গ্রামে। প্রায় ১ মাস পেরিয়ে গেলেও স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোন প্রদক্ষেপ না নেওয়ায় স্থানীয় ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, উত্তর বাখরাবাদ গ্রামের রাবেয়া বসরী মহিলা মাদরাসা ও দুটি পরিবারের বাড়ির চারপাশে প্রতিবেশীদের বাড়ি ও ইটের সীমানা দেয়াল। বের হওয়ার পথ না থাকায় ছাত্রছাত্রীদের প্রতিদিন মাদরাসা যেতে হয় বাঁশের মই বেয়ে প্রতিবেশীদের দেয়াল টপকে। আবার তাদের বাড়ি ফিরতেও হয় দেয়াল বেয়ে। দু-তিনবার পা ফসকে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে অনেকেই। প্রতিবেশীর এই অমানবিক আচরণ কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না স্থানীয়রা। এ ঘটনাকে চরম অনামবিক বলেন মনে করেন তারা। মানুষের চলাচলের রাস্তা কখনোই বন্ধ করা ঠিক নয় বলেও দাবি স্থানীয়দের।
ভুক্তভোগী রাবেয়া বসরী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হাফেজ নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, বি চাপিতলা গ্রামের মরহুম হাজী আব্দুর রহমান ২০১৮ সালে ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য রাস্তাটি মৌখিক ভাবে দিয়ে যান। কিন্তু তার মৃত্যুর পর ছেলে মাইনুদ্দিন ও তার ভাই শফিকুল ইসলাম মাদ্রাসা ও প্রতিবেশীদের যাতায়াতের রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয় চেয়ারম্যান ইকবাল সরকারের কাছে বেশ কয়েকবার গেলেও তিনি ২ বছর ধরে আমাকে ঘুড়াচ্ছেন। ২ বছর পূর্বে বাড়িসহ জমি কেনার প্রস্তাব দেন এরা। ক্রয় করতে রাজি না হওয়ায় সীমানা প্রচীর নির্মাণ করে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেয়। এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলেও জানান মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হাফেজ নজরুল ইসলাম।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও রামচন্দ্রপুর রামকান্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী শিক্ষক কবির আহমেদ ভূইঁয়া আক্ষেপ করে বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন যাবত এখানে বসবাস করছি এবং বসবাসের শুরু থেকেই ওই সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করে আসছি। হঠাৎ করে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেওয়া আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি।
সীমানা প্রাচীর নির্মানকারী মাইনুদ্দিন বলেন, প্রাচীর নির্মান করে আমি কোন অপরাধ করিনি। আমার জমিতে আমি প্রাচীর নির্মান করেছি। আর এ বিষয়ে আর কিছু বলতে চাইনা।
রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল সরকার বলেন, বেশ কয়েকবার আমি চেষ্ঠা করেছি স্থানীয় ভাবে মিমাংসা করা জন্য কিন্তু জমির মালিক মাইনুদ্দিন তার জমির উপর দিয়ে সড়ক দিতে রাজি হচ্ছেনা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আলাউদ্দিন ভূইয়া জনী জানান, অবরুদ্ধ হওয়ার বিষয়টি আমি জেনেছি। তাৎক্ষনিক ভাবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেছি স্থানীয় ভাবে মিমাংসা করে দেওয়া জন্য। এর পরও ভুক্তভোগীরা আদালতের সহযোগিতা নিতে পারেন।